শুক্রবার, ২৯শে মার্চ ২০২৪ -|- ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০-বসন্তকাল -|- ১৯শে রমজান, ১৪৪৫ হিজরি

পরীক্ষার হলে প্রতিমন্ত্রীর ভাতিজির কাণ্ড

প্রকাশিত হয়েছে- বুধবার, ৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২০
||
  • প্রকাশিত সময় : ফেব্রুয়ারি, ৫, ২০২০, ৬:১৭ অপরাহ্ণ

বাহাদুর ডেস্ক :

এসএসসি পরীক্ষায় কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার থানাহাট এ ইউ পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে অতিরিক্ত সুযোগ-সুবিধা না দেওয়ায় কক্ষ পরিদর্শক চায়না বেগমকে পুলিশে দেওয়ার হুমকি দিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেনের ভাতিজি পরিচয় দেওয়া এক ছাত্রী। এ সময় ওই ছাত্রীর বাবা প্রতিমন্ত্রীর শ্যালক এনামুল হক এসে কেন্দ্রে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করলে ওই কক্ষ পরিদর্শককে তাৎক্ষণিকভাবে অন্য কক্ষে ডিউটি দিয়ে পরিবেশ শান্ত করেন কেন্দ্র সচিব।

কক্ষ পরিদর্শক চায়না বেগম বলেন, মঙ্গলবার বাংলা ২য় পত্র পরীক্ষায় উক্ত বিদ্যালয়ের ১২নং কক্ষে আমার ডিউটি ছিল। পরীক্ষা চলাকালীন থানাহাট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের মানবিক শাখার শিক্ষার্থী অর্পিতার খাতা নিতে গেলে সে আমাকে বলে—‘আমাকে চেনেন? সময় না দিলে আপনাকে পুলিশে ধরিয়ে দেব।’ খবর পেয়ে মেয়ের বাবা এনামুল হক এসে আমাকে অপদস্থ ও অসম্মান করেন। পরিবেশ উত্তপ্ত দেখে কেন্দ্র সচিব এসে আমাকে অন্য কক্ষে ডিউটি দেন। পরীক্ষা শেষে আবারও এনামুল হক দলীয় লোকজন এনে আমার ওপর হামলার ষড়যন্ত্র করলে আমাকে কেন্দ্র সচিব নিরাপদে বাড়ি পৌঁছে দেন।

কেন্দ্র সচিব ও থানাহাট এ ইউ পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শেফাউন নাহার বলেন, প্রতিমন্ত্রীর শ্যালক এনামুল হকের মেয়ে অর্পিতা ১২ নম্বর কক্ষের একজন এসএসসি পরীক্ষার্থী। বাংলা ২য় পত্রের নৈর্ব্যত্তিক পরীক্ষা আধঘণ্টা সময়ের মধ্যে শেষ করতে হয়। এ সময়ের মধ্যে সকল পরীক্ষার্থী পরীক্ষা শেষ করে সাড়ে ১০টায় উত্তরপত্র জমা দিলেও ওই পরীক্ষার্থী উত্তরপত্র জমা না দিয়ে আরও উত্তর করতে থাকে। দুই/তিন মিনিট অতিবাহিত হওয়ার পর কক্ষ পরিদর্শক চায়না বেগম জোড় করে তার কাছ থেকে উত্তরপত্র নিয়ে নেন। এ সময় ওই পরীক্ষার্থী চিৎকার চেঁচামেচি করে কান্নাকাটি করলে তার বাবা এনামুল হক পরীক্ষার কক্ষে এসে চায়না বেগমকে অপদস্থ করেন এবং পরীক্ষার্থী অর্পিতা তাকে পুলিশে দেওয়ার হুমকি দেয়। পরে আমি উত্তপ্ত পরিবেশ শান্ত করতে ওই কক্ষ পরিদর্শককে সরিয়ে অন্য কক্ষে দায়িত্ব দেই।

তিনি আরও বলেন, পরীক্ষা শেষে মেয়েকে মারধরের অভিযোগে এনে আবার এনামুল হক দলীয় লোকজন নিয়ে এসে পরিবেশ উত্তপ্ত করেন। পরে পুলিশের সহায়তায় পরিবেশ শান্ত করে চায়না বেগমকে আমি নিজে তার বাড়িতে রেখে আসি। উনি যে ঘটনাটি ঘটিয়েছে তা ন্যাক্কারজনক। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সদস্যদের জানিয়েছি।

চিলমারী মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষার্থে আমরা সেখানে গিয়েছিলাম। তেমন কিছু ঘটেনি পরিবেশ শান্ত আছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ ডব্লিউ এম রায়হান শাহ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এ রকম ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না ঘটে সে ব্যাপারে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। পরবর্তীতে কেউ এ রকম পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা করলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

টি.কে ওয়েভ-ইন