শুক্রবার, ২৯শে মার্চ ২০২৪ -|- ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০-বসন্তকাল -|- ১৯শে রমজান, ১৪৪৫ হিজরি

দুধকুমার নদের ভাঙনে বিলিন হচ্ছে শত বছরের বসতি

প্রকাশিত হয়েছে- মঙ্গলবার, ১৬ আগস্ট, ২০২২
রনবীর রায় রাজ || কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত সময় : আগস্ট, ১৬, ২০২২, ১:৫৬ অপরাহ্ণ

 দুধকুমার নদের ভাঙনে বিলিন হচ্ছে কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার নুনখাওয়া ইউনিয়নের শত বছরের বসতি ব্যাপারীর চর গ্রামটি। গত এক সপ্তাহে এ নদেও ভাঙনে আবাদি জমিসহ ঘর বাড়ি হাড়িয়ে নি:শ্ব হয়েছে অনেক পরিবার। ভাঙনের হুমকির মুখে রয়েছে স্কুল, মসজিদ, কমিউনিটি ক্লিনিকসহ অনেক স্থাপনা। নাগেশ্বরী উপজেলার নুন খাওয়া ইউনিয়নের ব্যাপারীর চরগ্রামটিতে একশত বছরের জন বসতি। গেল সপ্তাহ থেকে দুধকুমার নদেও ভাঙনের মুখে পড়ে গ্রামটি। ইতিমধ্যে অনন্ত ১৫ পরিবার হাড়িয়েছে তাদের ভিটেমাটি। ঘরবাড়ি হাড়িয়ে তারা আশ্রয় নিয়েছে অন্যের বাড়িতে এবং পাশের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। অনেকের বাড়ি ভাঙনের মুখে পড়ায় সরিয়ে নিচ্ছে অন্যত্র। অনেকে হাড়িছেন আবাদি জমিসহ সহায়সম্বল। এখন ভাঙনের হুমকিতে আছে ব্যাপারির চর সরকারি প্রাথমিকবিদ্যালয়, কমিউনিটি ক্লিনিক, আরডিআরএসের ফেডারেশন ঘরসহ মসজিদও কবরস্থান। ওই গ্রামের ৭০ বছর বয়স্ক সিফাত উল্লাহ জানান, তার বাপ দাদারা এই চরে বসতি স্থাপন করেন। শত বছরের উপরে এখানে তার আছেন। হঠাৎ করে গত বছর চরটি দুধকুমার নদের ভাঙনের মুখে পড়ে। গতবছর পানি উন্নয়ন বোর্ড বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন রোধ করে। এবার বন্যার পর আবার ভাঙন তীব্র হলে তিনি তার ভিটে মাটি হাড়িয়েছেন। তিনি আরো জানান, তার মতো আরো ১৫ -২০ জন গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে নদের ভাঙনে সব হাড়িয়েছেন। বসত ভিটা হাড়ানো শহিদুল ইসলাম, জাহিদুল ইসলাম, হামিদা বেগমসহ অনেকে আশ্রয় নিয়েছে অন্যের বাড়িতে এবং পাশের স্কুল ঘরে। অনেকে ভাঙনের মুখে পড়ে বাড়ি ঘর ভেঙে সরিয়ে নিচ্ছেন। স্থানীয় শহিদুল আলম জানান, গত কয়েকদিনে তার বসত ভিটাসহ গাছগাছালি নদের পেটে গেছে। এছাড়া তিন বিঘা আবাদী জমিও চলে গেছে নদের পেটে। এখন তিনি নি:শ্ব। গোলাপী বেগম জানান, বাড়িতে এক ছিলেন, নদের ভাঙনে ঘরবাড়ি চলে গেছে সাথে চলে গেছে নিত্য প্রয়োজনিয় জিনিসপত্রসহ থালাবসন, কাপড়চোপর সবকিছু। ব্যাপারীর চর সমাজ কল্যান সংঘের সভাপতি ফজলুল হক জানান, গত বছর ভাঙনের সময় পানি উন্নয়ন বোর্ড বালু ভর্তি জিওব্যাগও টিউব ফেলে ভাঙন রোধ করলেও এবার কয়েক দফা যোগাযোগ করা হলেও খোঁজ নেইনি তারা। ভাঙন রোধ করা না গেলে কয়েক দিনে ব্যবধানে বিলিন হবে কয়েক হাজার মানুষের শতবছরের এই বসতি। কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল আল মামুন জানান, দুধকুমার নদের ভাঙন রোধেমূল ভূ-খন্ডের অংশে প্রকল্প চলমান থাকলেও চরাঞ্চল রক্ষায় কোন প্রকল্প নেই পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাছে। তবে ওই চরাঞ্চলের জনগণের দাবীর বিষয়টি উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে একটি প্রস্থাবনা আকারে পাঠানো হয়েছে বলে জানান তিনি।