প্রধান প্রতিবেদক ঃ
দরিদ্র পরিবারের সন্তান শামছুল আলম। অভাবের তাড়নায় তার ভাগ্যে জুটেনি ভালো খাবার, পড়া হয়নি ভালো পোশাক। এমনকি সুযোগ হয়নি প্রাইভেট কিংবা কোচিংয়ে পড়ার। তারপরও কঠোর পরিশ্রম ও অধ্যবসায়ে এসএসসি পরীক্ষায় গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়ে সবাইকে চমকে দিয়েছে সে। এখন তার স্বপ্ম পড়াশোনা করে প্রকৌশলী হওয়ার। কিন্ত টাকার অভাবে উচ্চ মাধ্যমিকে ভর্তি পারবে কিনা সেই শঙ্কায় আছে শামছুলের বাবা। শামছুল আলমের বাড়ি ময়মনসিংহের গৌরীপুরের গজন্দর গ্রামে। সে চলতি বছর গৌরীপুর রাজেন্দ্র কিশোর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। শামছুল আলমের বাবা রফিকুল ইসলাম পেশায় ভ্যানচালক। তিন ভাই ও এক বোনের শামছুল সবার বড়। তার অন্যান্য ভাই-বোনের স্থানীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন শ্রেণিতে পড়াশোনা করে। স্থানীয়রা জানান প্রতিদিন সাড়ে তিন কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়া করতো শামছুল। ভাল কাপড় না থাকায় বিদ্যালয়ে আসতে একটি মাত্র পুরানো স্কুল ড্রেসই ছিলো তার ভরসা। অভাবের তাড়নায় পরীক্ষার প্রস্তুতি হিসাবে প্রাইভেট কিংবা -কোচিং করতে না পারলেও ভালো ফলাফলে সে দরিদ্র মা-বাবার মুখে হাসি ফুটিয়েছে। শামছুলের বাবা রফিকুল ইসলাম বলেন উপার্জনের একমাত্র অবলম্বন নিজের ভ্যানগাড়িটা বিক্রি করে ছেলের পরীক্ষার ফরম ফিলাপের টাকা দিছি। ছেলের ভাল ফলাফলে আমি খুশি । কিন্ত ওরে কলেজে ভর্তি গেলে টাকা দরকার। আমার তো টাকা নাই। সবাই যদি সহযোগীতা করে তাহলে ছেলেকে পড়াশোনা করানো সম্ভব। নয়তো আমার কি আর করার আছে। রাজেন্দ্র কিশোর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক আব্দুল মালেক বলেন পড়াশোনার পাশাপাশি শামছুল একজন ভালো ফুটবলার। দারিদ্র্য যে কত নির্মম তা সে দেখছে। আর সে জন্য সমাজের শিক্ষানুরাগীদের প্রতি তার আর্তি—তারা যেন ওর মতো হতদরিদ্র ছাত্রদের পাশে এসে দাঁড়ায়।