বৃহস্পতিবার, ২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -|- ১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ-গ্রীষ্মকাল -|- ১৬ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

গৌরীপুর ১০টাকা কেজির খাদ্য বান্ধব কর্মসূচিতে অনিয়ম-দুর্নীতি!

প্রকাশিত হয়েছে- বুধবার, ১৬ মার্চ, ২০২২
প্রধান প্রতিবেদক || দৈনিক বাহাদুর
  • প্রকাশিত সময় : মার্চ, ১৬, ২০২২, ৯:০৯ অপরাহ্ণ

ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার সহনাটী ইউনিয়ন পরিষদে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অধিনে ১০টাকা কেজি মূল্যে খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির চাল বিতরণে প্রতিমাসে প্রায় ৫শ কার্ডে অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে ১৫হাজার কেজি চালু লুটপাটের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ইউনিয়নে চারজন ডিলার চাল বিতরণ করেন। চাল নিতে আসা মানুষের দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে চালও নেন মৃতরা! এছাড়াও একই ব্যক্তির একাধিক ক্রমিকে নাম, তালিকায় থাকা নামের সঙ্গে কার্ডের নাম মিল খোঁজে পাওয়া যায়নি। তালিকায় নাম থাকার পরেও চাল পায়নি অনেক সুবিধাভোগী।

সোমবার (১৪মার্চ/২০২২) এসব ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন সহনাটী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. সালাহ উদ্দিন কাদের রুবেল। তিনি জানান, ২/৩বছর আগে মারা গেছেন। সেই মৃতদের তালিকা পরিবর্তন না করে তাদের নামেই চাল বিতরণ করা হচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা খাদ্য অফিসার বিপ্লব কুমার সরকার জানান, সহনাটী ইউনিয়নে ২হাজার ৯৬জন প্রতিমাসে ৩০ কেজি করে চাল পাচ্ছেন। কোনো অভিযোগ পাওয়া গেলে তাৎক্ষনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কেউ মারা গেলে, এ বিষয়টি অবগিতকরণ এবং অন্য নামে হস্তান্তরের বিষয়টিও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান করে থাকেন। তালিকা পেলেই দ্রুত পরিবর্তনের উদ্যোগে নেয়া হবে।

এসব বিষয়ে তদারকি কর্মকর্তা উপসহকারী কৃষি অফিসার মো. শরিফুল ইসলাম জানান, আমরা তালিকা অনুযায়ী দিচ্ছি। কে মারা গেছেন, এগুলো আমার জানা নেই। কার্ড ছাড়া কাউকে চাল দেয়া হয়না।

ইউনিয়ন পরিষদ সূত্রে জানা যায়, খাদ্য বান্ধব কর্মসূচীর কার্ড নং ২৫৫। তিনি বহেড়াতলা গ্রামের মৃত কিতাব আলীর পুত্র মিসির উদ্দিন, ৮৬১নং কার্ডধারী পেচাঙ্গিয়া গ্রামের আব্দুল মিয়ার পুত্র হারুন অর রশিদ, ৭৭৬নং কার্ডধারী পল্টিপাড়া গ্রামের জয়দুল ইসলাম স্ত্রী মোছা. রম্লনা আক্তার তারা সবাই মারা গেছেন। তারপরেও তাদের নামে লাইনে দাঁড়িয়ে কে বা কারা চাল নিয়ে যাচ্ছে! এছাড়াও নিজের নামে কার্ড হয়েছে তাও জানেন না সাইদুর রহমান। তিনি সহনাটী ইউনিয়নের পল্টিপাড়া গ্রামের আব্দুল মান্নানের পুত্র। তিনি জানান, আমার নামে চাল তুলে নিচ্ছে অন্যরা। একই ব্যক্তি টেংগাপাড়া গ্রামের মতিউর রহমানের পুত্র লুট মিয়া। তিনি ৫৪০নং ও ৫৫৮নং দু’টি কার্ড করে চাল উত্তোলন করছেন।

পাছার বাজারে ডিলার মিলন মিয়া শিপন সোমবার চাল বিতরণের সময়ে দেখা যায় সিংহভাগ কার্ডে ছবি নেই। একজনের চাল অন্যরা নিয়ে যাচ্ছেন। অধিকাংশ কার্ডে নাম ও ক্রমিক কাটা-ছেঁড়া। এ প্রসঙ্গে নিয়োজিত তদারকি উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের পরিদর্শক কামরুল ইসলাম জানান, আমরা শুধু নাম দেখছি। কার্ডে ছবি নেই, কার কার্ড কে নিয়ে আসতেছে, তাও সনাক্ত করা সম্ভব হচ্ছে না।
সহনাটী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. সালাহ উদ্দিন কাদের রুবেল আরো জানান, ২০৯৬জনের মধ্যে প্রায় ৫শ কার্ডে গড়মিল-অনিয়ম রয়েছে। এ বিষয়ে ইউনিয়ন পরিষদের সবাইকে নিয়ে আলোচনা করেছি, সঠিক তালিকা প্রণয়নে দ্রুত উদ্যোগ নেয়া হবে।