বৃহস্পতিবার, ২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -|- ১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ-গ্রীষ্মকাল -|- ১৬ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

গৌরীপুরে শুধু ধান কাটা নয়, খড়ও শুকিয়ে দিলেন শহীদ চেয়ারম্যান!

প্রকাশিত হয়েছে- বুধবার, ৬ মে, ২০২০
||
  • প্রকাশিত সময় : মে, ৬, ২০২০, ৬:২১ অপরাহ্ণ

প্রধান প্রতিবেদক :
কাঁচা ধান কাটা, ফটোসেশন ধানকাটা নিয়ে যখন দেশজুড়ে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় চলছে! সেই সময়ে ময়মনসিংহের গৌরীপুরে শুধু ধান কাটা নয়, কৃষাণীদের সঙ্গে ধান শুকনো ও খড় শুকিয়ে চমক সৃষ্টি করলেন অচিন্তপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ শহিদুল ইসলাম অন্তর (ভিপি শহীদ চেয়ারম্যান)।
বুধবার (৬ মে/২০২০) একদিনে কাটা হয়েছে এ ইউনিয়নে খান্দার গ্রামের দরিদ্র কৃষক আব্দুল মজিদের ৩০শতাংশ, মোঃ হেলাল উদ্দিন ৫০শতাংশ, মোঃ মাসুম মিয়ার ৩০শতাংশ ও বর্গাচাষী আব্দুল হাইয়ের ২৫শতাংশ জমির ধান।


এছাড়াও বুধবার কাটা হয়েছে একই গ্রামের মঞ্জুরুল হকের ৪৫শতাংশ, আজিজুল হকের ৪০শতাংশ, আমিরুল ইসলামের ৬০শতাংশ, সোমবার কাটা হয়েছে আব্দুল ওয়াহাবের ৪২শতাংশ, নজরুল ইসলামের ৫৫শতাংশ, বিধবা মহিলা বুলবুলী আক্তারের ৩০শতাংশ।
গত টানা ৬দিন ধরে ইউনিয়নের বিভিন্ন অঞ্চলে কৃষকের ধান কেটে দিচ্ছেন, ইউনিয়নের চেয়ারম্যান, মেম্বার ও চেয়ারম্যানের পুত্রসহ পরিবারের সদস্যরাও। শহীদ চেয়ারম্যান অচিন্তপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগেরও সাধারণ সম্পাদক। ছাত্রজীবনে গৌরীপুর সরকারি কলেজ ছাত্র সংসদ নির্বাচনে ছাত্রলীগ প্যানেল ভিপি নির্বাচিত হন। তিনি জানান, শুধু আমরা নই, গ্রামে কাজ নেই এমন ২৭জন ধানকাটা শ্রমিকও সঙ্গে নিয়েছি। যাদের প্রতিদিনের প্রত্যেকের মজুরি ৫৫০টাকা ব্যক্তিগতভাবে পরিশোধ করছি। এ কর্মসূচীতে অচিন্তপুর ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার, ছাত্রলীগের কর্মী, স্বেচ্ছাসেবক ও চেয়ারম্যানের পরিবারের সদস্যরাও যোগ দিয়েছেন। ধানকাটা কর্মসূচীর এ টিমের সদস্য সংখ্যা এখন ৪২জনের। ৬/৭টি দলে বিভক্ত হয়ে একই দিনে ছয়/সাতজন কৃষকের ধান কেটে দিচ্ছেন।


এ কর্মসূচীতে অংশ নেন অচিন্তপুর ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার আবুল হাসেম, আনোয়ার হোসেন, সুমন মিয়া, রাকিব আহাম্মেদ, আব্দুর রউফ, ইউনিয়ন আব্দুল আউয়াল, চেয়ারম্যানের পুত্র ইবনুল আলবী ইউশা, ভাতিজা ফারহান মিয়া, ভাগিনা হৃদয় হাসান শিপন, ছাত্রলীগের সভাপতি মোঃ জুয়েল রানা, সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান, দেলোয়ার হোসেন খান, জয়নাল আবেদীন, সোহেল মিয়া।
অচিন্তপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম অন্তর জানান, আমরা শুধু ধান কাটবো, এক সঙ্গে কেটে কৃষকের বাড়িতে রাখলে ধান শুকানোও সমস্যা। এ সমস্যা সমাধানের জন্য ৬জন মহিলা শ্রমিক নেয়া হয়েছে। তারা ধান শুকিয়ে দিচ্ছেন। আমিও তাদেরকে উৎসাহ যোগাতে কাজ করেছি। আমরা ধানের সঙ্গে কৃষকের খড়ও শুকিয়ে দিচ্ছি। কেননা গোখাদ্যের জন্য ধানের চেয়েও খড়ের মূল্য অনেক বেশি!


তিনি আরো জানান, এই ছয় দিনে ১৯জন কৃষকের ধান কাটা হয়েছে। এ কর্মসূচী চলবে আরো ৪দিন। চেয়ারম্যানের এ কর্মসূচীর ভূয়শী প্রশংসা করেন কৃষক আব্দুল মজিদ। তিনি বলেন, আবারও বৈরী দু’দিন যাবত বৃষ্টিও হচ্ছে। আমরা এক/দু’জন শ্রমিক নিয়ে কাটলে অনেক সময় লাগতো। চেয়ারম্যানের লোকজন মাত্র আধা ঘন্টা কেটে দিয়েছেন। সূর্য্যাস্তের আগেই ধান ও খড়ও শুকিয়ে নেয়া যাবে। বর্গাচাষী আব্দুল হাই জানান, আমরা ৩ মেয়ে। একা মানুষ। চেয়ারম্যান এসে ধান কেটে বাড়িতে দিয়ে যাওয়ায় শংকামুক্ত হয়েছি।