ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার শ্যামগঞ্জ বাজারে বুধবার রাতে আগুনের লেলিহান শিখায় পুড়ে ছাই হয়ে গেছে মাহে রমজান ও পরিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে দোকানীদের অর্ধশত কোটি টাকার ঈদ সামগ্রী ও অর্ধশত কোটি টাকার মালামাল। আগুনে ভস্মিভূত হয়ে গেছে ১১৯টি ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান ও ১৪টি বাসা। ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের চোখের পানি ও আহাজারী কেউ থামাতে পারছেন না।
ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি নিশ্চিত করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফৌজিয়া নাজনীন। তিনি জানান, ক্ষতিগ্রস্থদের ভাষ্য অনুযায়ী ক্ষতির পরিমাণ শত কোটি টাকা। ক্ষতিগ্রস্থদের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করার চেষ্টা চলছে।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, বুধবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে শ্যামগঞ্জ বাজারের মোদকপট্রি এলাকার মন্ডল হার্ডওয়্যার স্টোর ও শম্ভু মোদকের ঘরের শর্ট সাকিট থেকে আগুনের সুত্রপাত হতে পারে। একই সময়ে রঙ ব্যবসায়ী সালাম মোড়লের দোকানেও আগুন দেখতে পাওয়া যায়। মাত্র ৮/১০মিনিটের মধ্যে আগুনের লেলিহান শিখা শ্যামগঞ্জের শতাধিক দোকানে ছড়িয়ে পড়ে। অগ্নিকাÐের খবর পেয়ে গৌরীপুর, ঈশ্বরগঞ্জ, ময়মনসিংহ, পূর্বধলা, ফুলপুর ও নেত্রকোনার ফায়ার সার্ভিসের ১২টি ইউনিট ঘটনাস্থলে এসে প্রায় তিন ঘন্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
এদিকে অগ্নিকাÐের খবর পেয়ে বন পরিবেশ ও জলবায়ু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য বীরমুক্তিযোদ্ধা নাজিম উদ্দিন আহমেদ এমপি, পুর্বধলার সংসদ সদস্য ওয়ারেসাত হোসেন বেলাল বীর প্রতীক, ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসক মোস্তাফিজার রহমান, উপজেলা পবিষদ চেয়ারম্যান মো. মোফাজ্জল হোসেন খান, ইউএনও ফৌজিয়া নাজনীন, পূর্বধলা উপজেলার নির্বাহী অফিসার জাহিদ হোসেন প্রিন্স, গৌরীপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সোমনাথ সাহা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
গৌরীপুর ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার মো. শাহজাদা বলেন, ময়মনসিংহ সদর, গৌরীপুর, ধোবাউড়া ও নেত্রকোনা সদর, ফুলপুর, পূর্বধলা ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের কর্মীরা প্রায় তিন ঘন্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
মনোহারী দোকানদার রণজিত সাহা জানান, মাহে রমজান ও সামনে ঈদের জন্য ব্যবসায়ীরা মালামাল এনে গুদাম করেছিল। মুর্হূতে সব ছাই হয়ে গেলো। আজ আমরা নিঃস্ব। চালের দোকানদার হরিদাস সাহা জানান, রমজান মাসের জন্য আগাম প্রস্তুতি ছিলো। দু’তিন দিনে প্রায় ২০লাখ টাকার চাল গুদামজাত করা হয়। সব পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। মিষ্টির দোকানের শম্ভু মোদক জানান, তিনি আজ নিঃস্ব হয়ে গেছেন। দোকানের সব মালামাল পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। মসল্লা ব্যবসায়ী অরুন সরকার জানান, এসে দেখি দোকানে শুধু আগুন, একটার মালও রক্ষা করা সম্ভব হলো না।