শুক্রবার, ১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -|- ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ-গ্রীষ্মকাল -|- ১০ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

গৌরীপুরে বিষমুক্ত শস্য উৎপাদনে মডেল কৃষক শহিদুল্লাহ ॥ উপজেলায় লালিমা বাঁধাকপি চাষেও সফল

প্রকাশিত হয়েছে- সোমবার, ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২২
প্রধান প্রতিবেদক || দৈনিক বাহাদুর
  • প্রকাশিত সময় : ফেব্রুয়ারি, ৭, ২০২২, ৭:৫০ অপরাহ্ণ

বিষমুক্ত শাকসবজি উৎপাদনে মডেল কৃষক মো. শহিদুল্লাহ (৪৬)। তিনি কোনো ফসলেই ব্যবহার করেন না কীটনাশক। সার ব্যবহারেও তিনি সাশ্রয়ী। রয়েছে জৈব সার আর কুচো সার উৎপাদনের নিজস্ব কারখানাও। এ উপজেলায় এবার লালিমা বা লাল বাঁধাকপি চাষ করে সাফল্য অর্জন করেছেন তিনি। সম খরচে অধিক লাভের কারণে প্রতিবেশী কৃষকদের মাঝেও ব্যাপক সাড়া পড়েছে। তিনি গৌরীপুর উপজেলার ডৌহাখলা ইউনিয়নের তাঁতকুড়া গ্রামের আবুল হাসিমের পুত্র।

গবেষণায় বলছে, লাল বাঁধাকপিতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে, যা ক্যান্সারের সেল বৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত করে। ফলে রঙিন বাঁধাকপি রয়েছে বাজারে ব্যাপক চাহিদা। মূল্যও দ্বিগুণ। শহিদুল্লাহ নিয়মিতভাবে আলু, শশা, ডাটা, লাউ, ঢেড়শ, চিচিঙ্গা, ঝিঙ্গা, ফুলকপি, বেগুন, মরিচ, টমেটো, শিম, ক্যাপসিকাম, মিষ্টি কুমড়া, বাঁধাকপিসহ মৌসুমী শাকসবজি নিয়মিত চাষ করেন। জমির অধিক ব্যবহারের জন্য আমন ধান কেটে ফাঁকা সময়ে চাষ করেছেন সরিষাও। এবার সরিষা উত্তোলন করে সেই জমিতে বোরো ধানের চারা রোপনেরও প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তিনি জানান, রঙিন বাঁধাকপি আর সাধারণ বাঁধাকপি উৎপাদন খরচ একই। তবে রঙিন হওয়ায় এ বাঁধাকপির দাম দ্বিগুণ। বগুড়া থেকে ১১শ বীজ এনে রোপন করেছিলেন। একটাইও মরেনি। ১০শতাংশ জমিনে প্রায় অর্ধলাখ টাকা লাভ হবে। তিনি আরো জানান, বাঁধাকপি ক্ষেতের ভিতরে ঝিঙ্গার বীজ রোপন করা হয়েছে। আগাম ও নতুন সবজির অধিক মূল্য থাকে। তিনি আরো বলেন, জৈব বালাইনাশক ও প্রাকৃতিক বালাইনাশক ব্যবহার করলে নিরাপদ খাদ্য এবং নিরাপদ জীবন।

এ প্রসঙ্গে উপজেলা উপসহকারী কৃষি অফিসার সুমন চন্দ্র সরকার জানান, মো. শহিদুল্লাহ হলেন নুতন ব্যারাইটিজ কৃষক। নতুন কোনো ফসলের খবর পেলেই তিনি সেটা চাষ করবেন। সেই ধারাবাহিকতায় এ উপজেলায় প্রথম লাল বাঁধা কপি চাষ করেছেন।
উপজেলা কৃষি অফিসার লুৎফুন্নাহার জানান, রঙিন ধরণের ধান-শাকসবজির প্রতি কৃষক শহিদুল্লাহ’র আগ্রহ অনেক বেশি। সে জন্য তিনিও প্রথমদিকে করলে অধিক লাভবান হন। আমরা চাই সব কৃষকের মাঝে তথ্য-প্রযুক্তির নতুনত্ব পৌঁছে দিতে। সেই লক্ষ্যে কাজ করছি।

তিনি আরো জানান, ভিটামিন সি, ই, কে, ফলিক অ্যাসিড, ম্যাগনেশিয়াম, ম্যাঙ্গানিজসহ বিভিন্ন ধরনের ক্যারোটেনেয়ড সমৃদ্ধ সবজি হচ্ছে বাঁধাকপি। এই সবজি ক্যান্সার প্রতিরোধে কাজ করে। গবেষণায় আরো দেখা গেছে, নিয়মিত বাঁধাকপি খেলে রক্তচাপ কমে, হজমশক্তি বাড়ায়, প্রদাহ কমায় এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।

ইউরোপিয়ান জার্নাল অব নিউট্রিশনে প্রকাশিত এক তথ্য থেকে জানা যায়, বাঁধাকপির জুস স্তন ক্যান্সারের সেল বৃদ্ধি কমায়। বয়োঃসন্ধির সময় নিয়মিত বাঁধাকপির রস খেলে স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি ৭২ শতাংশ কমে যায়। এটি প্রস্টেট ক্যান্সার প্রতিরোধেও বেশ কার্যকরী। জাতীয় ক্যান্সার ইনস্টিটিউট জার্নালের এক গবেষণা অনুসারে, বাঁধাকপিতে থাকা আইসোথিয়োকানেটস ও ক্যারোটিনয়েডস উপাদান ফুসফুসের ক্যান্সার প্রতিরোধে বিশেষ ভূমিকা রাখে।