আজ বৃহস্পতিবার ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

||
  • প্রকাশিত সময় : জানুয়ারি, ৫, ২০২০, ১০:৩৫ অপরাহ্ণ




গাইবান্ধা জেলা হাসপাতাল: চিকিৎসক সংকটে সেবা বঞ্চিত রোগীরা

অনলাইন ডেস্ক :

ডাক্তার, নার্সসহ অন্যান্য কর্মচারী সংকটে ভুগছে গাইবান্ধা জেলা হাসপাতাল। ২০১৬ সালে ১শ’ শয্যা থেকে ২শ শয্যায় উন্নীত হলেও হাসপাতালটি আগের চিকিৎসক বা জনবল দিয়েই চলছে। আগের জনবল কাঠামো হিসেবেও অনেক চিকিৎসক পদ শূন্য রয়েছে। এখানে প্রতিদিন সহস্রাধিক রোগী চিকিৎসা নিতে আসেন। চিকিৎসকের অভাবে অনেককে সেবা না নিয়েই ফিরে যেতে হয়।

১শ’ শয্যার জনবল হিসেবে এখানে মোট চিকিৎসকের পদ রয়েছে ৪২টি। এর মধ্যে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পদ ২০টি। আর বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের ১৫টি পদই খালি। এ ছাড়া অন্যান্য চিকিৎসকের পদ শূন্য রয়েছে ৮টি। এখানে কর্মরত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের মধ্যে রয়েছেন এনেসথেসিয়া বিভাগের সিনিয়র ও জুনিয়র মিলে দু’জন। এ ছাড়া জুনিয়র গাইনি, কার্ডিওলজি ও জুনিয়র কনসালট্যান্ট (শিশু) বিভাগে একজন করে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক আছেন।

সার্জারি, অর্থ সার্জারি, চক্ষু, ইএনটি, চর্ম ও যৌন, মেডিসিন বিভাগে সিনিয়র ও জুনিয়র কোনো বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নেই। সব মিলিয়ে এই হাসপাতালের সার্বিক চিকিৎসা ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে।

হাসপাতালে ডাক্তারদের সকাল ৮টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করার কথা। কিন্তু বেলা ১টার মধ্যেই অধিকাংশ ডাক্তার কর্মস্থল ত্যাগ করেন। কারণ তারা বাইরে প্র্যাকটিসে ব্যস্ত থাকেন। ডাক্তাররা হাসপাতাল ত্যাগ করার সুযোগে টিকিট কাউন্টারও বন্ধ হয়ে যায়। ফলে দূর-দূরান্ত থেকে আসা রোগীদের চিকিৎসা না নিয়েই ফিরে যেতে হয়।

হাসপাতালের তথ্য কেন্দ্রটি বেলা ১টা পর্যন্ত কখনোই খোলা থাকে না। হাসপাতালে নার্স সংকট না থাকলেও নার্সরা রোগীর সেবার চেয়ে তাদের নিজস্ব কক্ষেই গল্পগুজব করে সময় কাটান। রাতে যে চিকিৎসক দায়িত্বে থাকেন তিনি বিশ্রামকক্ষেই বেশিরভাগ ঘুমিয়ে থাকেন। রাতে ডিউটিরত নার্সদেরও একই অবস্থা। রোগীদের লোকজন ডাকলে তারা বিরক্ত হন বলে অনেকে অভিযোগ করেছেন।

এই হাসপাতালে ১৫ জন আয়া ও বয় রাখা হয়েছে। বেসরকারিভাবে নিয়োগ দেয়া এই আয়া ও বয়দের নামমাত্র পেমেন্ট দেয়া হয়। বিভিন্ন খাত থেকে অর্থ কেটে তাদের পেমেন্ট দেয়া হয়। নামমাত্র পেমেন্টের ফলে এসব আয়া ও বয় রোগীদের কাছ থেকে বিভিন্নভাবে টাকা-পয়সা আদায় করেন।

কনসালট্যান্ট (সার্জারি) ও কনসালট্যান্ট (অর্থ) সার্জারি না থাকায় এই হাসপাতালে কোনো অপারেশন হয় না। সামান্য জটিল রোগী হলেও তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল বা অন্যত্র চিকিৎসা নিতে পরামর্শ দেয়া হয়।

হাসপাতালে কর্মরত এক চিকিৎসক জানান, একজন সিনিয়র চিকিৎসকের গড়ে ওঠা সিন্ডিকেটের কারণে এখানে অব্যবস্থাপনা বিরাজ করছে। হাসপাতালের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি অকেজো। এ ক্ষেত্রে ওই সিন্ডিকেটের ভূমিকা রয়েছে। নতুন কোনো ইসিজি মেডিসিন আনতে না আনতেই তা অকেজো করে দেয়া হয়। অতি প্রয়োজন হলে বাইরের প্যাথলজির দোকান থেকে ইসিজি মেশিন নিয়ে এসে পরীক্ষা করানো হয়। এক্সরে মেশিন দুটির মধ্যে ১টি ২ বছর ধরে অকেজো। আলট্রাসনোগ্রাম করার মেশিনও সচল নয়। হাসপাতালের রেডিওলজিস্ট পদটিও শূন্য।

একজন সিনিয়র কর্মচারী জানান, একটি সিন্ডিকেট গোটা হাসপাতালই নিয়ন্ত্রণ করছে। এ কারণে রোগীর খাবারের মানও নিম্ন পর্যায়ে। চারজন সুইপার দিয়ে গোটা হাসপাতাল পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ করানো হয়ে। এ কারণে টয়লেটগুলোর অবস্থা বেহাল। নাকে রুমাল না ধরে সেখানে ঢোকা যায় না।

এদিকে হাসপাতালের প্রশাসনিক ও পরিসংখ্যান কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন খাতে কর্মচারীর পদ রয়েছে ৯১টি। এর মধ্যে দুই কর্মকর্তার পদসহ ৪০টি পদই শূন্য। এ ছাড়া ৫টি এমএলএসএসের পদের সব কটিই বিলুপ্ত করা হয়েছে। ফলে হাসপাতাল পরিচালনায় নানা জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে।

হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক (আরএমও) পদটি শূন্য রয়েছে বেশ কিছুদিন। মেডিকেল অফিসার ডা. মাসুদকে ভারপ্রাপ্ত আরএমও হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তিনি জানান, চিকিৎসকের পদ শূন্য থাকায় রোগীর সেবা যথাযথভাবে দেয়া সম্ভব হচ্ছে না।




Comments are closed.

     এই বিভাগের আরও খবর




অনলাইন জরিপ

জাতিসংঘের বিশেষ দূত এলিস ক্রুজ বলেছেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সুফল সব মানুষের কাছে পৌঁছাচ্ছে না। আপনিও কি তা-ই মনে করেন?

View Results

Loading ... Loading ...

পুরনো সংখ্যার নিউজ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০