বুধবার, ২৪শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -|- ১১ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ-গ্রীষ্মকাল -|- ১৫ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

কলাগাছের আঁশে স্বপ্ন দেখছেন গোবিন্দগঞ্জের মোজাম

প্রকাশিত হয়েছে- শুক্রবার, ৭ মে, ২০২১
||
  • প্রকাশিত সময় : মে, ৭, ২০২১, ১১:৩০ পূর্বাহ্ণ

বাহাদুর ডেস্ক :

কলাগাছের আঁশে স্বপ্ন দেখছেন ২৬ বছরের তরুণ মোজাম উদ্দিন। এই আঁশ থেকে সুতা ও শপিং ব্যাগসহ নানা সামগ্রী তৈরির পরিকল্পনা আছে তার। কাজ করছেন তা নিয়ে। গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার মহিমাগঞ্জ ইউনিয়নের গোপালপুরে কৃষক বায়েছ উদ্দিনের ছেলে মোজাম।

এই তরুণের দাবি, পরিত্যক্ত কলাগাছের আঁশ থেকে তৈরি হবে সুতা, সেই সুতায় হবে উন্নতমানের কাপড়, শপিং ব্যাগসহ নিত্য প্রয়োজনীয় অনেক জিনিস। তার এই স্বপ্ন বাস্তবায়িত হলে এলাকার অসংখ্য বেকারের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। তিনি বলেন, এর মাধ্যমে দেশ অর্জন করতে পারবে বিদেশি মুদ্রা। সেইসাথে কলাগাছের বর্জ্য থেকে তৈরি জৈব সার দেশে সারের ঘাটতি পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখবে।

এলাকার কলা চাষিরা জমি থেকে কলা কেটে নেওয়ার পর কলাগাছগুলো যত্রতত্র ফেলে রাখেন। এই গাছ কয়েকদিন পরই পঁচে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পরিবেশ দূষিত করে। আর এ থেকেই মোজাম উদ্দিনের চিন্তায় আসে কলাগাছ থেকে পাটের মত আঁশ উৎপাদন করা।

কারিগরি জ্ঞান সম্পন্ন মোজাম নিজেই দীর্ঘ চেষ্টার পর তৈরি করেন আঁশ উৎপাদনের একটি মেশিন। যা দিয়ে তিনি ইতোমধ্যে আঁশ উৎপাদন শুরু করেছেন।
মোজাম জানান, তাকে এ কাজের  সার্বক্ষণিক সহযোগিতা করছেন তার স্ত্রী। অর্থের অভাবে নিজেই কলাগাছ সংগ্রহ, পরিবহন, কলাগাছের বাকল তোলা, তা  থেকে মেশিন দিয়ে আঁশ বের করা, পানিতে ধোয়া এবং রোদে শুকানোর কাজ করছেন তিনি। সরকারিভাবে স্বল্প সুদে তাকে প্রয়োজনীয় ঋণ দেওয়া হলে এই কলাগাছের উচ্ছিষ্টকে শিল্প হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে পারবেন বলে আশাবাদী তিনি।

তিনি আরও জানান, চীনে এই আঁশের যথেষ্ট চাহিদা রয়েছে। এছাড়া ঢাকার একটি কোম্পানি এই আঁশ কেনার ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেছে এবং প্রতিকেজি আঁশের মূল্য ২৩০ টাকা।

এ ব্যাপারে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা খালেদুর রহমান বলেন, কলাগাছের বাকল থেকে আঁশ উৎপাদন কার্যক্রম পরিদর্শন করেছি এবং উৎপাদিত আঁশের নমুনা সংগ্রহ করে এর গুণগত মান যাচাইয়ের জন্য ঢাকায় পাঠিয়েছি। যদি গুণগত মান বিবেচনায় আঁশের চাহিদা পাওয়া যায়, তাহলে উদ্যোক্তা মোজাম উদ্দিনকে প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়া হবে।

এ ব্যাপারে গাইবান্ধা বিসিকের সহকারী ব্যবস্থাপক রবিন রায় জানান, তার এ বিষয়টি ভাল এবং ব্যতিক্রর্মী উদ্যোগ। পচনশীল ফেলে দেওয়া কলাগাছ থেকে ফাইবার উৎপাদন করার বিষয়টি একটি উল্লেখ্য আবিষ্কার। তাদের পক্ষ থেকে মোজামের জন্য সার্বিক সহযোগিতা থাকবে।

টি.কে ওয়েভ-ইন