শুক্রবার, ২৯শে মার্চ ২০২৪ -|- ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০-বসন্তকাল -|- ১৯শে রমজান, ১৪৪৫ হিজরি

করোনা প্রতিরোধে ঘরে অবস্থান নিশ্চিতে ময়মনসিংহে ডিসির নেতৃত্বে পুলিশ সেনাবাহিনীর যৌথ টহল

প্রকাশিত হয়েছে- শনিবার, ৪ এপ্রিল, ২০২০
||
  • প্রকাশিত সময় : এপ্রিল, ৪, ২০২০, ১:৪৯ অপরাহ্ণ

এম.এ আজিজ, স্টাফ রির্পোটার, ময়মনসিংহ

করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে মানুষের ঘরে অবস্থান নিশ্চিত করতে ময়মনসিংহে প্রশাসন কঠোর অবস্থানে রয়েছে। শুক্রবার বিকালে বিভাগীয় নগরী ময়মনসিংহের গাঙ্গিনার পরড় মোড়ে এ দৃশ্য দেখা গেছে।
এর আগে করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় টানা সরকারী ছুটিতে মানুষজনকে নিজ ঘরে অবস্থান নিশ্চিত করতে বৃহস্পতিবার জেলা প্রশাসনের সম্মেলনকে গুরুত্বপূর্ণ এক সভা হয়। করোনা ভাইরাস(কোভিড-১৯) প্রতিরোধে-জেলা দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির বিশেষ সভায় জনস্বার্থে গুরুত্বপূর্ন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সিদ্ধান্তের মধ্যে জেলায় ব্যাটারি বা ইঞ্জিনচালিত কোনো যানবাহন চলবে না। শুধুমাত্র প্যাডেল রিক্সা চলবে। এছাড়া মুদির দোকান বেলা ১টা পর্যন্ত এবং যে কোন কাঁচাবাজার বিকাল ৫টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। অপরদিকে জেলার সাপ্তাহিক সকল হাট-বাজার নতুন করে ঘোষণা না দেয়া পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। এছাড়াও, জরুরি বা বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হলে, আইনশৃঙ্খলা রাকারী বাহিনীর কাছে জবাবদিহিতা করতে হবে। এরপরও ঔষধের দোকান ছাড়া সন্ধ্যার পর অন্য কোথাও বাতি জ্বলবে না।
একই সাথে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দোকানগুলির সামনে ৩ ফুট দূরে বৃেত্তর মাঝে থেকে পণ্য কিনতে হবে। দোকানের কর্মচারীদের মাস্ক, গ্লাবস,পরতে হবে ও দোকান, দোকানের টেবিল পরিষ্কার রাখতে হবে।
দোকানের সামনে জনসমাগম/আড্ডা করা যাবে না। কোন দোকানের সামনে আড্ডা হলে তার দায়ভার দোকান মালিককে নিতে হবে। দোকানের সামনে ১ ঘন্টা পর পর ব্লিচিং পাউডার দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে। এ সব নির্দেশ অমান্য করলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলেও নির্দেশনা জারী করা হয়।
জেলা প্রশাসক মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আহমার উজ্জামান, সেনাবহিনীর লেঃ কর্ণেল মোহাম্মদ মেহেদী হাসানসহ পুলিশ, ডিবি ও সেনাবাহিনী যৌথভাবে জাতীয় এ দুর্যোগে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ, আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ ও মানুষকে ঘরে ফেরা নিশ্চিত করতে যথাযথ ও সুষ্ঠু সমন্বয়ের মাধ্যমে কাজ করে যাচ্ছেন।

একই সাথে সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে প্রয়োজনীয় পন্য কিনে দ্রুত বাসায় ফেরাতে জনগণকে পরামর্শ দিয়ে আসছেন। এছাড়া নিয়মিত হাত ধোয়া, মাস্ক ব্যবহার ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখাসহ এেেত্র স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলারও পরামর্শ দেয়া হয়।
অপরদিকে দিনমজুর, শ্রমিক, কৃষক, খেটে খাওয়া দরিদ্র জনগোষ্ঠির জন্য অতিরিক্ত তালিকা তৈরি করতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, সমাজের সকল স্তরের জনগণকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রশাসন।
এক প্রসঙ্গে জেলা প্রশাসক বলেন, সমাজের সবচেয়ে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী কৃষি শ্রমিক, দিনমজুর, রিক্সা/ভ্যান চালক, পরিবহন শ্রমিক, ভিুক, প্রতিবন্ধী, পথশিশু, স্বামী পরিত্যক্তা/বিধবা নারী এবং হিজড়া সম্প্রদায়ের প্রতি বিশেষ নজর রাখাসহ ত্রাণ সহায়তা নিশ্চিত করতে যৌথভাবে কাজ করা হচেছ। কেউ এই সুবিধার বাইরে থাকবেনা এবং কেউ যাতে কোন ধরণের দুর্নীতি করতে না পারে তার দিকে কঠোর নজরদারী চলছে।
তিনি আরো বলেন, ডিজিটাল প্লাটফর্মে নানা গুজব রটানো হচ্ছে। গুজবে কান দিবেন না এবং গুজবে বিচলিত না হতে সকলেও প্রতি আহবান জানান।
পরে জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে পুলিশ সুপার নগরীর তিনকোণা পুকুর পাড়, নাসিরাবাদ কলেজ মাঠ, থাগডহর ও বেগুনবাড়িসহ বিভিন্ন এলাকায় সামাজিক দুরত্ব নিশ্চিত করতে টহল দেন। এর আগে পুলিশ সুপার ব্রীজ মোড়, কালিবাড়ি, ভাটিকাশর এবং সেনাবাহিনী সানকিপাড়া, জিলা স্কুল মোড়সহ বিভিন্ন এলাকায় টহল দেন। সকালে সানকিপাড়া রেলক্রসিং কাচাবাজার, মেছুয়া বাজার কাচাবাজারে টহল দেন এবং সামাজিক দুরত্ব নিশ্চিতে আগত ক্রেতা ও দোকান মালিকদের সাথে কথা বলেন। এ সময় অনেকেই জবাবদিহিতার মধ্যে পড়েন।